কলমের জোরে

একদিন একটা কথা শুনেছিলাম, কলমের চেয়ে বড় অস্ত্র হয়না। অনেক বিপ্লব আর অনেক বিপ্লবির যেমন জন্ম দিয়েছে, তেমনি অনেক

প্রেম-মুরতির বর্ণনাও করেছে এই লেখনি। কিন্তু এখনও এই উক্তির স্বার্থকতার প্রমান পেলাম না। আজকাল তো সমাজে ধর্ষণ এতটাই বেড়ে গেছে যে কবির শব্দের, কবির ভাবনার, আর কবির চিন্তার ধর্ষনেও পিছিয়ে নেই মানুষ। কবির নাম নাই বা নিলাম। কারন আমার নাম নেওয়া কি না নেওয়া তে কিছু এসে যায়না। আজ গোটা দেশ হয়তো বন্ধী ঘরের বোকাবাক্সতে দেখে কবির নাম জপ করছে। ফেসবুক, টুইটার, আর ওয়াটস্যাপে মন্তব্যের ছয়লাপ। আমার তো এটাও সন্দেহ আছে যে অনেকে পুরো ব্যাপার টা আগাগোড়া জানেও না। সে যাই হোক। এই ব্যাপার আর ঘাটাঘাটি করতে চাইনা।

আসল কথাতে আসা যাক।

এই নাম না উল্লেখিত কবির দোষ হল উনি হিন্দুদের সেন্টিমেন্টে এ চরম আঘাত হেনেছেন, ওনার লেখনির দ্বারা। খুব ভুল হয়েছে কবি বাবু। আপনার কত বড় ভুল হয়েছে আপনি জানেন? আপনি কি জানেন দিল্লির দামিনি ধর্ষণ কাণ্ডে যতজন জড়িয়ে ছিল তারাও হিন্দু? ধর্ষণের সময় যখন তাদের হিন্দু ধর্মে আঁচড় আসেনি , আপনি একটা কলমের জোরে সেই আঁচড় এনে দিলেন? আবার একজনের তো নামেই “রাম” ছিল। ঐ নাম নিয়েও তাদের কর্মে প্রতিফলন ঘটেনি। আমরা জাতের পুতুল , যাকে ধর্মের সুতো দিয়ে নাড়ানো হয়। আর আপনি সেটা কাটতে চলেছিলেন । আপনার সাহসের তারিফ করতেই হয়।

কত বেড়াজাল পেরিয়ে, কত গন ধর্ষণের স্বাক্ষি হয়ে , কত ধর্মের বাধ্যবাধকতাকে পেছনে ঠেলে আমরা আজ এখানে দাঁড়িয়ে। একজন কবি যখন সেটা তুলে ধরেছে তখনই ধর্মের কিছু মহাপুরুষ তাদের অবদানকেই বড় দেখানর জন্যই সেই কবিকে বারবার ঠেলে দিচ্ছেন দলদলে। দোষই তার কি ছিল?
সত্যি কথা বলার? এখন তো তাহলে আমারও সত্যি লেখার আগে ভাবতে হয়। তাহলে আর কবির বাক- স্বাধীনতাটা কি রইলো যদি তার বাক আর স্বাধীনতাটাকে আলাদা করে দেওয়া হয়। এবং এতটাই আলাদা করে দেওয়া হয় যে তারা নিজেদের অস্তিত্বই হারিয়ে ফেলে।

শেষে একটাই কথা বলতে চাই। হয়ত এই কয়েক শব্দগুচ্ছতে কিছু এসে যাবেনা , কিন্তু সত্যি মানতে ভয় নেই। বিদ্রোহ তখন ছিল আর বিদ্রোহ এখনও আছে। আর কলমের জোর তখনও ছিল আর তা এখনও আছে। কবিকে আটকান যাবেনা, না তার ভাষাকে । কারন “চিত্ত যেথা ভয়শুন্য উচ্চ সেথায় শির”

Facebook Comments Box

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *