“নারীশক্তির জয়জয়কার” ……… কথাটা প্রথমেই লেখার একটা কারন আছে। কারন এখন নারীশক্তির প্রভাব আমাদের সমাজে এতটাই বেশি যে সেই শক্তির জয়জয়কার না করে থাকা যায়না। যেখানেই এখন পা রাখি নারীশক্তির প্রভাব তো পাবই। সে মহাকাশে পাড়ি দেওয়া থেকে শুরু করে CCD এর employee হোকনা কেন।
এক মিনিট একমিনিট, এই CCD এর employee এর কথা কেন এল হঠাৎ??? মহাকাশে নারীশক্তির সাথে CCD এর নারীশক্তির কি সঙ্গ?? না মহাশয়, সঙ্গ আছে।মহাকাশে পাড়ি দেওয়া নারীর মানসিক ও শারীরিক শক্তি দুই ছিল, কিন্তু CCD এর employee নারীশক্তির শুধু শারীরিক শক্তির কথা বলতে চাই।
এবার বিস্তারিত করা যাক ব্যাপারটা,
গত সপ্তাহের শুরুর দিকে জয়পুরের হাওয়ামহল এর CCD তে এক অসাধারন ঘটনা ঘটেছে। CCD এর এক মহিলা কর্মচারী একজন গ্রাহক কে অসাধারন চড় মেরেছেন। এবার আপনারা ভাববেন ” নিশ্চয় শ্লীলতাহানির ঘটনা, ছেলেটা আজেবাজে জায়গায় হয়ত হাত দিয়েছে, তাই মেয়ে তার self defence এর উপযোগ করেছে।‘’
একদম ভুল ধরেছেন ব্যাপারটা। ঘটনা হয়েছে পুরো ভাবনা চিন্তার বাইরে। ছেলেটা (নাম টা না জানাই শ্রেয়) CCD তে আড্ডা মারতে মারতে হঠাৎ (অথবা ভুল করে) তার চোখ পড়ে CCD এর ফ্রিজের ভেতরে। দেখতে পায় আরশোলা দিব্যি খাবারের ওপর চড়ে বেরোচ্ছে। ছেলেটার মাথায় কি এল সে প্রতিবাদ করে বসল (বোকা ছেলে)। প্রতিবাদের বিষয় – এই CCD তে এরকম নিম্নমানের , নোংরা খাবার গ্রাহকদের দেওয়া হয়। এই প্রতিবাদের জেরে কেই বা বসে থাকবে ওখানে বলুন। লোকজন ধিরে ধিরে চলে যেতে শুরু করল।
এবার ঘটনা আসল মোড় নিয়েছে। হঠাৎ করে এক মহিলা কর্মচারী (স্বভাবে মাতঙ্গিনি হাজরা) এই গ্রাহকদের চলে যাওয়া সইতে না পেরে পাল্টা প্রতিবাদ করে লাগালো চড় ছেলেটির গালে। আর তাকে পায় কে? মহিলা বলে কথা , সবকিছু অধিকার আছে ওনার। চড় টা তো অতি সাধারন বাবু। চড় মারার কারন ঐ ছেলেটার জন্যই CCD এর সব গ্রাহক চলে যাচ্ছে। মানে ওনার মতে ওখানে বসে ঐ আরশোলা মাখানো খাবার গ্রাহকদের খাওয়া উচিত ছিল। এতো আজব কথা।
এখানে আমার প্রশ্ন টা এটা নয় যে মহিলা কর্মচারী টা চড় মারল কেন, আমার প্রশ্ন হল চড় মারাটা কি খুবই জরুরি ছিল এই অবস্থায়? ভালোভাবে, ভদ্রভাবে, শিষ্টতার সাথে জিনিস টা পরিচালনা করা যেতনা? ওহ ওহ…… আমারই ভুল। উনি তো মহিলা। সব শক্তির অধিকারি। তাই একটু দেখিয়েছেন তাতে ক্ষতি কি?
আমরা আসলে পুরুষ কেন্দ্রিক সমাজ কে মহিলা সমসাময়িক বানাতে গিয়ে আসল সমাজটাই হারিয়ে ফেলছি। আমিও চাই মহিলারা সেই সমস্ত অধিকার পাক যেগুলো এতদিন পুরুষরা পেয়ে এসেছে। কারন তারা সেই অধিকার পাওয়ার সমস্ত সামর্থ্য রাখে। কিন্তু তার অপব্যাবহার টা করা উচিত নয়।
একটু ভেবে দেখুন এই ঘটনা টা যদি উলটো ঘটতো? অর্থাৎ ছেলেটা যদি মেয়েটা কে চড় মারত তাহলে এতোক্ষনে ছেলেটার ফাসির ORDER বেরিয়ে যেত। এটাই বলতে চাই আমি হইহুল্লড় যখন করছ দাড়ি পাল্লা টা সমান রেখে করো, আত্মসম্মান টাও সমান রেখে করো। কারন অনেকেই বসে আছে মজা দেখার জন্য, মন্তব্য করবার জন্য। তাই সব দিক্ই যেন সমান থাকে। অধিকার হাতে পাওয়া আর ঐ অধিকার কে কাজে লাগানোর মধ্যে অনেকটা বোঝাপড়া লাগে। সেটা বুঝতেই সময় চলে যায়। তাও যাওয়ার আগে আরেকটা কথাই বলতে চাই – “নারীশক্তির জয়জয়কার”