নিমপাতা জবা অপরাজিতা দিয়ে সহজেই তৈরি আবির

সামনেই ফাল্গুনী পূর্ণিমা অর্থাৎ সমগ্র বাঙালির রঙের উৎসব দোলযাত্রা। সকল মানুষ মেতে উঠবে রঙের খেলায়। বাজার ভরে উঠেছে হরেক রকম রঙের পসরায়। লাল, নীল, হলুদ, সবুজ, গোলাপি আবীর বা জলরঙ এর সম্ভার সাজিয়ে বসেছে দোকানি রা। শিশু থেকে বয়ষ্ক সকলেই খুশির রঙে মেতে উঠতে ভালোবাসে। কিন্তু হরেক রঙের মধ্যেই রয়েছে বিপদের আশঙ্কা । দল উৎসবের আগেই বাজারে ছেয়ে যায় নিত্য নতুন রঙের। কিন্তু সে সব কি উপকরণ দিয়ে তৈরি সেটা আমাদের অজানা। কলকাতা পুলিশ বহু বছর ধরেই প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে কৃত্রিম ও রাসায়নিক দিয়ে তৈরি রঙের বিপক্ষে। যে রং ত্বকের পক্ষে খুবই ক্ষতিকর।তাই সাম্প্রতিক কালে জৈব ভেষজ উপাদান দিয়ে তৈরি রঙের চাহিদা বাজারে বেড়ে চলেছে। কিন্তু সাধ্যে বাদ সেধেছে দাম। ভেষজ উদ্ভিদ ফুল পাতা দিয়ে তৈরি রঙের দাম রাসায়নিক উপাদান দিয়ে তৈরি রঙের চেয়ে বেশি। তাই স্বাভাবিক ভাবেই বাঙালির পকেটে টান পড়ছে।বেশি দাম দিয়ে কেনার পর ও শ্রী রং সম্পূর্ণ ভেজালবিহীন কিনা সেটা জানার উপায় নেই। তাই কিছু ঘরোয়া জিনিস পত্র দিয়েও ভেষজ রং তৈরি করা যায় বাড়িতেই। তাতে না না রঙে রাঙানোর আনন্দ যেমন থাকবে তেমনি ত্বকের ক্ষতির সম্ভাবনা কম হবে। আজ আমরা জেনে নেবো সেই সকল পদ্ধতির কথা।

প্রথমেই আসি প্রেমের রঙে অর্থাৎ লাল । এই রং বানাতে দুটি উপকরণ লাগবে যা সবার বাড়িতেই থাকে। জবা ফুলের পাঁপড়ি শুকনো, অল্প চুন, কিছুটা বিটের রস। এই তিনটি মিশিয়ে কম আঁচে গরম করলেই তৈরি হয়ে যাবে লাল রং। লাল রঙ
একই রকম ভাবে গোলাপি জবা দিয়েও তৈরি করতে পারেন গোলাপি রং তবে সেখানে বিটের রসের পরিমাণ আন্দাজ মত দিতে হবে যাতে গোলাপি রং লাল না হয়ে যায়।
এরপর আসি নীল রঙে । সবার বাড়ির উঠনেই আছে অপরাজিতা গাছ। এই ফুল শুকিয়ে গুঁড়ো করে নিয়ে তার সঙ্গে পাউডার মিশিয়ে তৈরি করে নিন নীল রং।

হলুদ রঙের প্রথম উপকরণ হলো হলুদ গুঁড়ো। তার সঙ্গে গাঁদা ফুলের পাঁপড়ির গুঁড়ো মিশিয়ে জলে ফুটিয়ে নিলে তৈরি হলুদ রঙ। সবুজ রঙ
সবুজ রঙের জন্য মাথায় লাগানোর হেনার সঙ্গে সাদা পাউডার মিশিয়ে তৈরি করা হয়। আর একভাবেও করা যায়। নিম পাতা বা,পালং শাক শুকিয়ে গুঁড়ো করে সাদা পাউডারের সঙ্গে মেশালেই সবুজ রং তৈরি। কমলা
কমলা রঙ পেতে পলাশ ফুল শুকিয়ে গুঁড়ো করে তার সঙ্গে হেনা মিশিয়ে তৈরি হয়ে যাবে হলুদ আবির।

দোল উৎসব হোক সম্পূর্ণ নিরাপদ । কৃত্রিম রং থেকে নিজেদের ত্বককে বাঁচাতে সচেতন হতে হবে নিজেদের ই। ভেষজ পরিবেশ বান্ধব রং ছড়িয়ে দিন সকলের মধ্যে। ফাগুনের রঙে রঙিন হয়ে উঠুক আসন্ন বসন্ত উৎসব।

Facebook Comments Box

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *