প্রতিটা নারী মনে, একটা মায়ের বসবাস থাকে। প্রতিটা নারী মন, মাতৃত্ববোধ নিয়ে জন্ম নেয়। এই পৃথিবীর অনেক নারীরা মা হওয়ার সৌভাগ্য প্রাপ্ত হলেও, কিছু কিছু নারী আছেন যাদের দেহে নবজাতক ফুল পরিস্ফুটিত হতে পারে না নানান কারণে। তাই বলে কি তারা মা নয়? তারা মা হতে পারবে না?
শুধু কি একটা নারী গর্ভে পরিস্ফুটিত হলেই একজন নারী মা হতে পারে?
সেই নারী, যার কোল আলোকিত করে একটা শিশুর জন্ম হয় নি, সে কি মা নয়?
বা সেই পিতা যার ছোট্ট শিশুটার জন্মকালেই জন্মদাত্রী পরলোক গমন করেছেন। সেই বাবা কি সেই শিশুর জন্য মা না? সেই পিতার মনে কি মায়ের মতন মমতা, মাতৃত্ববোধ নেই? সেই বাবা কি মা হতে পারেন না?
যে নারীর শিশুটি জন্মের পরই মৃত্যুর স্বাদ নিয়েছে। হয়তো আর শিশুর মুখ দেখবার আশা নেই, সেই নারী কি মা নয়?
সেই নারী মনা মানুষ, যাকে লোকে নানান নামে ডাকে। সেই মনে কি মায়ের স্নেহ হতে পারে না? সে কি মা হতে পারে না?
মা শুধু জন্মদাত্রী নয়। একজন মা একটা শিশুর ভাষা, শিক্ষা, জ্ঞান, বিজ্ঞান। একটা শিশু মায়ের চোখ দিয়েই এই পৃথিবী দেখতে শুরু করে। মায়ের কোলেই স্পর্শ প্রাপ্তির আবেগ প্রথমবারের মতো অনুভব করে। মায়ের কাছ থেকে কথা বলা শেখে, মায়ের কাছ থেকেই শেখে এই পৃথিবীকে সুন্দর চোখে দেখতে পাওয়ার ক্ষমতা। একজন মা’ই একটি শিশুর জন্য প্রথম চিকিৎসক, শিক্ষক, বিজ্ঞানী। সন্তানের সব প্রশ্ন প্রথমে মায়ের কাছেই ছুটে আসে, সকল দুঃখ মায়ের আঁচলে ঝড়ে। জন্মের পর এক জীবন মা তার সন্তানকে আগলে রাখে।
শুধু নয় মাস পেটে ধরলেই মা হয়ে উঠা হয় না। মাদার তেরেসা কে তো চেনেন। তিনি মা হয়ে উঠার সব থেকে সুন্দর আদর্শ। মা হতে হলে মনে মাতৃত্ববোধ থাকতে হয়। লিঙ্গ, জাতি, ধর্ম, কর্ম, যোগ্যতা, ক্ষমতা এইসব কিছু দিয়ে মা হয়ে উঠা হয় না। মাতৃত্ববোধে মা হয়ে জন্ম নিতে হয়।
২০২২ সালে চলুন একটা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই নিজের জায়গা থেকে। প্রতিটা মমতাময়ী মানুষকে মায়ের দর্যা দেই। ঠিক তেমনি সম্মান করতে শিখি যেমন নিজের মা কে সম্মান করি। ভালোবাসা, মাতৃত্ববোধ ছড়িয়ে পড়ুক ভুবন জুড়ে।