লেখা পড়া তে শিশুর অনীহার জন্য, আমরা কি দায়ী নই? আমার মতে আমরাই, অনেকটা দায়ী। তাদের খেলার ছলে এবং আনন্দ সহিদ না পড়িয়ে, অযথা তাদের উপর পড়াটাকে, বোঝার মতো ঘাড়ে চাপিয়ে দেই। কোনো শিশু পড়তে না চাইলে, তার জন্য আমরাই দায়ী।
আমরা অনেকেই, আমাদের সন্তানকে লিখতে দিয়ে ভাবি, ও যখন লিখছে আমি তো বসেই আছি, একটু দেখি তো whatsApp এ কে,কি message পাঠালো! facebook এ কে, কি ছবি upload করলো! তখন আমরা মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পরি। বাচ্চাটির লেখাপড়ার দিকে, আর নজর দেই না, সেই সময় আমরা যদি, তাকে মনোযোগ দিয়ে খেলার ছলে ও তার খেলনা দিয়েই পড়া বুঝিয়ে দেই, তাহলেই কিন্তু বাচ্চাটির কাছে, পড়া টা মজার বিষয় মনে হতো।
তাই, আজ যে বাচ্চাটি পড়তে বসতে চায় না, তার জন্য আমরা দায়ী।
আমরা বেশির ভাগ অভিভাবকরাই চাই, এই competition এর যুগে, আমাদের সন্তান সব বিষয়ে frist হোক। সেই লোভে কি করি! তাদের খেলার সময় না দিয়ে, লেখা-পড়া, গান-বাজনা, নাচ, আর্ট, সবকিছু চাপিয়ে দেই। বাচ্চাটির কি ভালো লাগে সেটা বুঝার চেষ্টাও করি না। তাকে ফাস্ট হতে হবে, এই কথাটি শিশুটির মাথায় ঢুকিয়ে দিই। মেরেধরে ও লোভ দেখিয়ে, তার ইচ্ছে না থাকলেও জোর করেই কিন্তু আমরা সব আদায় করে নিই। ফলে আস্তে আস্তে তাদের, সব বিষয়ের প্রতি, বিরক্তি ভাব চলে আসে। এর জন্য আমরা দায়ী।
আমাদের কাজের সুবিধার জন্য,বাচ্চাকে মোবাইল দিয়ে বসিয়ে দেই। সে কার্টুন এবং গেমস নিয়ে চুপচাপ থাকে। এতে কি হয়, আমরা ঐ মুহূর্তে হয়তো বিনা বাঁধায়, কাজগুলো করে নিতে পারি, কিন্তু শিশুটির কতটা যে ক্ষতি হলো ও ভবিষ্যতে আরো যে ক্ষতি হবে! সেটা আমরা, বুঝেও বুঝি না।
আমরা সবাই জানি একটা শিশুকে, কিভাবে পড়ালে ভালো হয়। তবুও আমরা এগুলো করি না।
যেমন শিশুকে খেলার ছলে পড়াতে পারি। বাড়িতে মোটা কাগজ কেটে বাচ্চাটির সামনেই অ-ঔ,ক- ঁঁ এবং A-Z, এসব বানিয়ে, সেগুলো খেলার ছলে কোন অক্ষরকে কি বলে, সেটা চিনিয়ে দিতে পারি। এতে বাচ্চাটির জানার আগ্রহ বাড়বে। যদিও বাজারে এসব কিনতে পাওয়া যায়। তবুও শিশুর সামনে বানালে, সে এটাকে পড়া না ভেবে খেলনা ভেবে খেলবে।
অঙ্ক শেখানোর জন্য, তার খেলনাই ব্যবহার করতে পারি। বাচ্চাটিকে বলা হলো যাও তো, তোমার ঐ খেলনা থেকে দশটা খেলনা নিয়ে এসো। আনার পর বলা হল, এবার তিনটা রেখে এসো। রেখে আসার পর জিজ্ঞেস করা হলো বলতো, কটা খেলনা এনেছিলে? কটা রেখে আসলে? এখন আমার কাছে কটা আছে? তখন কিন্তু সে অনায়াসেই বলে দেবে।
আবার রাস্তায় গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে, বলা হলো বলো তো গাড়িটির পেছনে নাম্বারটি কত?
বিভিন্ন ভাবে শিশুকে খেলার ছলে পড়ালে, ওদের পড়ার প্রতি অনীহা আসে না। কিন্তু আমরা এতটাই ব্যস্ত যে, তাদের সময় দেওয়ার সময় খুব কম। পড়া একটি মজার বিষয়হলেও, সেটাকে আমাদের ইচ্ছাকৃত ভুলের জন্য, বাচ্চারা বিরক্ত মনে করে।