প্রিয় নীললোহিত,
পরিস্থিতির দারুণ অবক্ষয়ে তোমাকে চাই।
পৃথিবী জুড়ে মেকি মানুষ, অনুভূতি, সভ্যতার দমবন্ধ সময়ে এক বিধ্বংসী ঝড় রূপী তোমায় চাই।
হাজার লোলুপ চোখের সামনে প্রতিনিয়ত নগ্ন অনুভব করা নারীদের, ওই চোখগুলোকে খুবলে নেওয়ার সাহস জোগাতে তোমাকে চাই।
অকালে সন্তানহারা মায়েদের কান্নার রোল থামাতে, দরদী তোমাকে চাই।
ধর্ম নিয়ে পৈশাচিক খেলায় মাতা অর্থ ক্ষমতালোভী রাজনীতিকদের পায়ের তলার মাটি কেড়ে নিতে তোমায় চাই।
আজ ভালোবাসার বড় অভাব নীললোহিত, তাই ভালোবাসা শেখাতে প্রেমী, তোমায় চাই।
জানি, তথাকথিত activist কখনওই নও তুমি, যার জীবন আগাগোড়াই বিপ্লব, তার বিপ্লব করার প্রয়োজন হয় না।
চাকরি-সমাজ-বয়সের তোয়াক্কা না করে পায়ের তলায় সর্ষে নিয়ে দিগ্বিদিক ছুটে চলা আজন্ম প্রেমিক তুমি।
তুমি মুক্ত, স্বাধীন, তুমি ‘তুমি’ই।
আজীবন তাই আমরা ‘তুমি’ হতে চাই; পারি না, অজস্র বাঁধনের ফাঁসে।
মস্তিষ্ক আর হৃদয়ের অসম যুদ্ধে স্বভাবতই হারে হৃদয়।
তাই শত অন্যায়-অবিচারেও চোখে-মুখে কুলুপ আঁটতে বাধ্য হওয়ার যন্ত্রণায়, কখনো ‘তুমি’ হতে না পারার ব্যর্থতায় গুমড়ে যাই আমি বা আমরা।
তাই এ বোবা মুখে ভাষা জোগাতে তোমাকে চাই।
কিন্তু কোথায় তুমি? হয়তো ব্যস্ত খুবই।
তাই এ প্রেমিকার তোমার কাছে কাতর আবেদন—
নীললোহিত, আমায় আশীর্বাদ করো, শক্তি দাও, আমি যেন ‘তুমি’ হতে পারি,
আমি যেন আমার অন্তরে সুপ্ত নীললোহিতকে জাগাতে পারি,
যেন এ কাতর আর্তনাদকে সহস্রের কলোরব করে তুলতে পারি,
আমার নির্বাক চোখের স্ফুলিঙ্গকে দাবানল বানাতে পারি।।
…নীললোহিত, পরিস্থিতির নিদারুণ অবক্ষয়ে তোমাকে চাই।
প্রেমহারা দুনিয়ায় প্রেম ফিরিয়ে আনতে তোমাকে চাই।
আমার নীরবতা ভাঙতে তোমাকে চাই।
তাই আজ আমি ভীষণভাবেই ‘তুমি’ হতে চাই।
আমি ‘আমি’ হতে চাই।
~ইতি তোমার চির-প্রেমিকা