ভাদ্রমাস তো শুরু হয়ে গেল, বন্ধুরা বাজারে কি নতুন ফলের সন্ধান করতে হচ্ছে? বাঙালি মানে বারো মাসে তেরো পার্বণ সেটা তো ভূলে থাকা যায় না, এই মাস শুরু হতেই আমাদের এক নতুন স্বাদের আশায় থাকতে হয়। কথা দিচ্ছি, আজকের আলোচ্য বিষয়ের শেষে, আমার খাদ্যরসিক বন্ধুদের মুখে স্বাদ ও মনে ইচ্ছে জেগে উঠবে।
আগামী সোমবার ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে গোপাল রূপে আরাধনা করা হবে। ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে শ্রীকৃষ্ণের জন্ম হওয়ার কারণে সেই দিনটা জন্মাষ্টমী উৎসব হিসেবে পালিত হয়। কৃষ্ণ ঠাকুরের ভোগ তৈরীর তালিকা থাকে এই মাসের নতুন সুস্বাদু ফল তাল, যা সকলের কাছে জনপ্রিয়।
জানা গেছে, বাসুদেব তাঁর পুত্র কৃষ্ণকে নন্দরাজের কাছে রেখে আসার পর, গোকুলে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব উপলক্ষে নন্দ উৎসবের প্রথম তালের বড়া খাওয়া হয়েছিল। শাস্ত্র থেকে জানা যায়,জন্মাষ্টমীর দিনে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ভোগ হিসেবে তালের বড়া দিতে হবে, শুধুমাত্র বড়া নয়, তালের তৈরী নানা ধরনের সুস্বাদু রান্নার পদ দিয়ে সাজিয়ে দিতে হয়। তাল গাছের বেশ বড় আকারের কালো বর্ণের পাকা তাল দিয়ে তৈরি হয়- তালের বড়া, তাল ক্ষীর, তালের লুচি, তালসত্ত্ব, তালের জুস, তালের কেক ও তালের সেঁকা পিঠা ইত্যাদি।
নিন্মলিখিত জনপ্রিয় কিছু রান্নার পদ নিয়ে আলোচনা করা হল-
তালের বড়া:- পরিমাণমতো চালের গুঁড়ো বা আটা, তাল, নারকেল কোরা,চিনি ও হালকা গরম জলে দিয়ে মাখিয়ে, গোল গোল আকারে বড়া বানিয়ে ডুবো তেলে মুচমুচে করে ভেজে ফেলুন তালের বড়া।
তালসত্ত্ব:- তালের রস ও চিনি মিশ্রণে তৈরি হয় তালসত্ত্ব। তারপর সেটি রোদ শুকিয়ে সারা বছর খাওয়া যায়।
শুধু স্বাদে নয়, সুস্বাস্থ্যের জন্য উপযোগী-
-তালে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকায় ক্যানসার প্রতিরোধে সক্ষম।
– ভিটামিন-বি অভাবজনিত রোগ নিরাময়ের জন্য ভূমিকা পালন করে।
– এছাড়াও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে, দাঁত ও হাড়ের ক্ষয় প্রতিরোধে সহায়ক।
আর দেরী কিসের, সকাল সকাল বাজার থেকে ভালোমানের তাল কিনে নিয়ে এসে রকমারি রেসিপির স্বাদ মেটাও আর সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হও।