‘র্যাগিং’ বর্তমান সমাজে একটি ভীষণ প্রচলিত শব্দ। অভিধানে যার অর্থh ‘নগ্নাবস্থায় উৎকট ও কুৎসিত কৌতুক ক্রীড়া’। বাস্তবে এটি আধুনিক তরুণ সমাজের ভাবভঙ্গীর মুখে এক জ্বলন্ত কলঙ্ক। এটি এমন এক লজ্জা, ঘেন্না, অস্বস্তিতে ঘেরা অনুভূতি যার মোকাবিলা প্রতিনিয়ত বহু শিশু ও তরুণদের করে যেতে হচ্ছে। প্রতিক্ষণে এমন হাজারটি ছাত্র মানসিক অত্যাচারের বশবর্তী হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে।
আজকের দিনে স্কুল ও কলেজে ‘র্যাগিং’ শব্দটি খুবই পরিচিত। এখনকার ছেলেমেয়েরা কোনো শিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠানে নিজেদের নিরাপদ মনে করে না কারণ তারা সবসময় কোনো এক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার মুখোমুখি হওয়ার আশঙ্কায় থাকে।
শিক্ষা, জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের বিদ্যালয় অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠান তাদের সুন্দর ভবিষ্যৎের কথা কল্পনা করে কিন্তু তাদের সেই আকাঙ্ক্ষা যদি অভিশাপে পরিণত হয় তবে তাদের সন্তানদের জীবনে ঘোরতর দুর্দিন নেমে আসে। একটি শিশু মন যদি সারাক্ষণ বিপদের আসন্নতায় শঙ্কিত হতে থাকে বা ‘র্যাগিং’ নামক অত্যাচারের শিকার হয় তবে কীভাবে তার শিক্ষা সম্পূর্ণ হবে?
আসলে মূল দোষ আমাদের সৃষ্টি করা এই পরিবেশের, এই সমাজ ব্যবস্থার। বাস্তবের কুরুচিমূলক পরিবেশই অপরাধীদের অপরাধ করতে উৎসাহ দেয়। স্বাভাবিকভাবে উল্লাস বা আমোদের ছলে কিছুজন র্যাগিংটাকে উপভোগ করতে চায় আর শিকার হিসেবে বেছে নেয় কোনো এক নিরপরাধ ছাত্রকে। মানুষের রুচি আর মানসিকতা আজ এতটাই নীচ যে তারা অন্য একজন মানুষকেই মানসিক এবং শারীরিকভাবে অত্যাচার করে তৃপ্তি পায়।
সরকার কর্তৃক র্যাগিং-এর জন্য অবশ্য বিশেষ আইন চালু করা হয়েছে, সেটি নিম্নলিখিত—
“UGC Regulations On Curbing The Menace of Ragging in Higher Educational Institutions,2009.”
আইন চালু করার খাতিরে র্যাগিং-এ যুক্ত ছাত্র-ছাত্রীদের বেশ কিছু শাস্তি নির্ধারিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের তরফে তাদের ভর্তি বাতিল করে দেওয়া হয় এবং যাবতীয় পরীক্ষা, ক্লাস ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পর্কিত সমস্ত প্রকার কর্মসূচী থেকে তাদের বিরত রাখা হয়। এ ছাড়াও অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে যাতে সেই নিম্ন মানসিকতা সম্পন্ন ছাত্রটি সুযোগ না পায় তার ব্যবস্থাও সুনিশ্চিত করা হয়। আইন চালু করার কিছু সুফল লক্ষ্য করা গেলেও কিছু খারাপ দিকও লক্ষণীয়।
এখন দেখা যায়, কোনো ছাত্রের ওপর সত্যিই অত্যাচার করা হয়েছে কিনা খতিয়ে দেখার আগেই বিভিন্ন সংবাদপত্র থেকে শুরু করে যাবতীয় সোশ্যাল মিডিয়া ভীষণভাবে উৎসাহিত হয়ে পড়ে উক্ত প্রতিষ্ঠানটিকে কাঠগড়ায় তোলার জন্য, হয়তো খুবই সামান্য কোনো ঘটনাকে তারা বিশাল আকারে জনগণের সামনে তুলে ধরে যার ফল ভোগ করে উক্ত প্রতিষ্ঠানটির সাথে যুক্ত সকলে।
মূলত র্যাগিং সমস্যার মূল কাণ্ডারি কিছু মানুষের ভুল ভাবনা যার পরিবর্তন প্রয়োজন। তাই এই অপরাধ শাস্তি দিয়ে নিবারণ করা যাবেনা। বরঞ্চ অপরাধীদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে তাদের মনের পরিস্থিতি বদল করতে হবে। প্রয়োজনে কোনো বিশেষজ্ঞের সাথেও আলোচনার মাধ্যমে উক্ত ছাত্র বা ছাত্রীটিকে সঠিক ধারণা দেওয়া যেতে পারে। এই বদলের জন্য প্রয়োজন অভিভাবকদের বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই লক্ষ্য করা যায় যে কোনো একটি ছেলে বা মেয়ে একাকীত্বে ভুগছে, তাদের বাবা-মায়ের সঙ্গ হতে তারা বঞ্চিত। আর এই একাকীত্বই তাদের অপরাধ করতে উৎসাহ জোগায়। কোনো শিশুই কোনো অপরাধের মনোবৃত্তি নিয়ে জন্মায় না, পরিস্থিতির চাপে তারা বাধ্য হয় অপরাধী হতে। তাই শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অভিভাবকদের শক্ত হাতে এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করে এক সুন্দর, সুপরিকল্পিত, হিংসা-দ্বন্দ্বহীন সমাজ গড়ে তুলতে হবে যাতে শিশু ও তরুণ সমাজ তাদের শৈশব এবং কৈশোর জীবন সঠিকভাবে চালিত করতে পারে।
“সমাজ বড়ই নিষ্টুর আজ,
তরুণ সমাজ হারিয়েছে লাজ!
সমাধান সামনেই দাঁড়িয়ে;
দাও না তোমার দু-হাত বাড়িয়ে॥”
The vibrant city of Kolkata is set to host an extraordinary musical event as renowned Indian music…
In a heartwarming ode to friendship and the unifying spirit of Pujo, SVF Brands has…
The year 2024 has not been what I had planned so far. Everything went downhill.…
Following the resounding success of the inaugural edition, SVF Musicproudly announces the arrival of the…
Amidst ongoing speculations regarding the leading lady opposite Shakib Khan in the upcoming film 'Toofan',…
This article originally appeared in DC Journal: https://dcjournal.com/why-does-a-rich-chicago-law-firm-keep-suing-indian-tribes/ Why does a deep-pockets Chicago law firm keep…
This website uses cookies.