আমার কালবৈশাখী

আমার কালবৈশাখী ,

বসন্তের রেষ কাটেনি তখনো, হাওয়ায় কোথায় যেন হারিয়ে ফেলার ক্লোরোফর্ম! জানালার ধারটাও বিট্রে করছে…
পলাশের আগুন ঝলসাচ্ছে, আমার রোদচশমার প্রয়োগ বাড়ছে…
হঠাৎ এক বিকেলে ঝড় উঠলো, একটা উথাল-পাথাল করা ঝড়! উদ্দাম অথচ স্নিগ্ধ, সব এলোমেলো করার ক্ষমতা রাখে, আবার সাজানোরও!

সেদিনও আমার জানালাটাই আমার সঙ্গী ছিল, ওই হাই পাওয়ারের চশমার পর, ওইটাই আমার একান্ত নিজের বলে দাবি করতাম, আজও করি… তবে তালিকায় সারি বেড়েছে আজ! হয়তো…

দেখেছো, আবার কী বলতে কী বলছি, কথার পিঠে কথা চাপানোর অভ্যেসটা আমার খানিক সহজাত হয়ে দাঁড়িয়েছে! সে যাক…
তোমায় আজ চিঠি লিখছি, হঠাৎ!

জানিনা, কোনো উত্তর আদৌ এসে কড়া নাড়বে কি না দরজায়, কিংবা আদৌ এই খসড়াটা পৌঁছবে কিনা তোমার কাছে…
তবুও, কিছু না বলা, অথবা একাধিকবার বলেও না বলা-দের খুব জানাতে ইচ্ছে করছে আজ তোমায়! অজানা কোনো না লেখা দলিলের ওয়ারিশে…

প্রেমটা বোধহয় ঋতু মানেনা, না? আদৌ কিছু মানে কি?
মানলে কি সত্যিই দুজন ভিন্ন প্রকারের মানুষ এভাবে বাধা পড়তে পারতো! অতর্কিতে?

তোমার ধোপদুরস্ত বেশভূষার পাশে, সুতির শাড়ি আর ঘন কাজলে, খানিক বেমানান আমি!
তবুও প্রেম এসেছিল, অসময়ে!
আমাদের অপ্রস্তুতির মাঝরাস্তায় বাঁধ সেধেছিল, গ্রীষ্মের দাবদাহের আগের সেই সিক্ততার গন্ধ মেখে, আমরা ভালোবেসেছিলাম! ভালোথাকার-রাখার অঙ্গীকারদের সঙ্গী করেছিলাম!
তোমার ঘামে ভেজা রুমালে আদর খোঁজার আস্কারাদের প্রশ্রয়ের অবকাশেরা তখন সবুজ!
আমার নরম আঁচলে স্বপ্ন বোনার কারিগর তখন মনের মণিকোঠায়… যত্নে আছে!

তারপর একদিন, অনেক গ্রীষ্ম পর, ঝড় এলো, আবারও! আমাদের যত্নে তুলে রাখা অসময়ের বৃষ্টির ফোঁটাগুলো, শুকিয়ে যেতে লাগলো… অজান্তেই!
তারপরের পর টা জানা নেই আজও! হয়তো কোনো নতুন কোনো অসময় ফের…

ইতি,
তোমার অসময়িনী৷

Facebook Comments Box

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *