তোমায়,
“তোমার চুলে যে রোদ,
মেঘের মতন চুলে!
তোমার চোখে যে রোদ,
সেও যে মেঘের মত চোখ।”
সেই দিনটা, সেই ২০শে জুন, ২০১৩, সেই আকাশ ভেঙ্গে ভিজিয়ে দেওয়া, সেই তোমার চোখে চোখ রাখা, লুকিয়ে নয়, একদম সরাসরি- সাহসী, প্রথমবার, সেই প্রথম দেখা হওয়ার দিনটা। সেই চোখ, সেই ঝিরঝিরে বৃষ্টি লাগা চুলের ঢেউ ভুলিনি কোনোদিন। আজও চোখ বুজলে ফুটে ওঠে সেই দিনটা, প্রতিটি ক্ষণ, প্রতিটি মুহূর্ত অনুভব করি আজও।
জানতে চাইলে আমি নীরব কেন! কেন কিছু লিখিনি এতদিন! আমি জানিনা, আমি সত্যিই জানিনা।শুধু জানি, আমি তোমার জীবনের প্রথম প্রেম হলে, মনে রেখো তুমি আমার জীবনের একমাত্র প্রেম। আর কবি তো বলেই গেছেন, “ নীরবতাই কথা বলে অবিরত…”
তোমার সাথে দেখা করব বলে সেদিন আমি টানা আড়াই ঘণ্টা মেট্রোস্টেশনের বাইরেটায় অপেক্ষা করেছিলাম। জানোতো খুব রাগ হয়েছিল, জমাট বাঁধা অভিমান বুকের কাছে দলা পাকাচ্ছিল সময়ের সাথে সাথে। ভেবে রেখেছিলাম শুনিয়ে দেব আচ্ছা করে তোমাকে। কী মনে করো নিজেকে, প্রথম দিন দেখা করবে বলে এতক্ষণ অপেক্ষা করালে। কিন্তু জানোতো, সাদা কুর্তিটা পড়ে হন্তদন্ত হয়ে যেই এসে দাঁড়ালে আমার সামনে, আমি তোমার নরম চাহুনির দিকে তাকিয়ে সব ভুলে গেছিলাম। সব অভিমান গলে জল হয়ে গেছিল নিমেষেই। এখন আমি স্মৃতির গলিতে ঢুকে মাঝে মাঝেই তোমার জন্য অপেক্ষা করি। এমন অপেক্ষা সারাজীবন করতে পারি। “ মধুর বরষা যায়, অপেক্ষা যেন অনন্ত প্রায়…”
আগে আমি এই প্রেমের মরশুম বর্ষা ব্যাপারটাকেই বড্ড ন্যাকা ভাবতাম। এই কাদা চপচপে বর্ষায় আবার প্রেম হয় নাকি! কিন্তু তুমি সব পালটে দিলে। সেই যখন তুমি আমি দাঁড়িয়ে ছিলাম আর বৃষ্টির ছাঁট এসে পড়ছিল আমাদের গায়ে। সেদিন বুঝেছিলাম প্রেম মানেই বর্ষা, বর্ষা মানেই প্রেম। সেই থেকে আজ অবধি, প্রতিটি বর্ষায় আমি জানালার ধারে গিয়ে বসি আর বৃষ্টির প্রতিটি কণায় খুঁজে পাই তোমায়। জানি তুই এলে বৃষ্টি হয়েই আসবি…
সিগারেটটা ছাড়তে পারিনি এখনও। জানি রাগ করবে। আসলে কিছুই তো পারিনি আমি। কথা রাখতে পারিনি, তোমাকে বুঝতে পারিনি, নিজেকেও তো কোনোদিন বোঝাতে পারিনি ঠিক করে, পারবোও না কোনদিন হয়তো। এই না পারা গুলোকে নিয়েই বেঁচে আছি। তোমায় নিয়েই বেঁচে আছি, তোমার বর্ষামুখর স্মৃতির রসদেই দিনগুলো কেটে যাচ্ছে বেশ। আর হ্যাঁ শোনো, তুমি কোনোদিন আমার নেপথ্য প্রেমিকা নও। তুমি আমার স্পষ্ট-স্বচ্ছ ভালবাসা। প্রেম বলতে আমি শুধু তোমায় বুঝি।
ইতি,
ভালবাসি…