আরো একবার হাতটা ছুঁয়ে দেখ…
(পর্ব- ১)
তড়িঘড়ি বাড়ি থেকে বেড়িয়েছিল পালক। আর একটু হলে ট্রেনটা মিস করতো। মা আজ আবার শুরু করেছিল বিয়ে নিয়ে। বাবার বন্ধুর ছেলে। এই নিয়ে পাঁচটা বিয়ে ক্যান্সেল করেছে পালক। না এবার আর কিছুতেই হল না! কিন্তু একটা বুদ্ধি তো বের করতে হবে। ছেলে এখানে থাকে,ডাক্তার! এমনকি ছেলের বাড়ি পালকের কলেজের কাছেই। তাই কোনো যুক্তিই বিয়ে ক্যান্সেলের জন্য অকাট্য নয়।
উফফ, এই কলেজস্ট্রীট চত্বরে এলেই মন ভালো হয়ে যায় পালকের। রাস্তা দিয়ে ট্রাম চলছে কোনো তাড়া নেই। দুপাশে পুরোনো বইয়ের গন্ধ। এর মধ্যেই পালক হারিয়ে যায়!
কলেজস্কোয়ারের দুপাশে কলেজ পড়ুয়াদের ভিড়। এখনো সবাই প্রেম করছে। ইশ! পালক যদি আবার ফিরে যেতে পারতো দিনগুলোয়। এই সাতাশ বছরে পালক যেন কেমন বুড়িয়ে গেছে!
উফফ, চারটে বাজে। নীরার কি কোনোদিন কাণ্ডজ্ঞান হবেনা! এই প্রেমিক যুগলের পাশে বসতে অস্বস্তি হচ্ছে পালকের।
— সরি সরি দেরী হয়ে গেল না? আসলে জানিসই তো তিয়াসটা দেরী করিয়ে দিল। ক্রাশ কফির অফার করলে ছাড়া যায় বল!
চোখ টিপল নীরা। মেজাজ চড়ছে পালকের।
— এখন এখান থেকে চল প্লিজ! এরকম জায়গায় অস্বস্তি হয় আমার!
— কোথায় যাবি? কফি হাউস চল! গিয়ে বলবিনা আবার সিগারেটের ধোঁয়ায় অসহ্য লাগে! টিপিকাল ন্যাকা হচ্ছিস দিন দিন!
— এই রাস্তায় এলে অহর্ষির কথা মনে পড়ে খুব! মনে আছে তোর?
— কী মনে থাকবে? ওই বোকা**র কথা মনেও রাখতে চাই না! এতো কিছুর পরেও কেন ভাবিস? শিক্ষা হয়না তোর!
— নীরা একটা উপকার করবি?
— আবার কোন ছেলেকে গিয়ে বলতে হবে তোর চরিত্র খারাপ! আর ক’টা ছেলে ক্যান্সেল করবি তুই!
— সাতাশ বছর বলে কি বিয়ে করাটা আবশ্যিক?
— বিয়ে করা নয়। একটু নিজের মতন বাঁচাটা উচিত। একটা ছেলের জন্য নিজেকে আজ পাঁচটা বছর ধরে শেষ করছিস। কাকু-কাকিমাকে ছেড়েই দিলাম, নিজের প্রতি অন্যায়টা আর কতদিন চালাবি?
অতো ভাবিস না। বলে দেবো! ছেলেটার নাম ঠিকানা পাঠিয়ে দিস।
(চলবে…)