কথা দেওয়া থাক (পর্ব- ৫)

কথা দেওয়া থাক

পর্ব- ৫

মেঘঃ চল দোকানটায় গিয়ে দাঁড়াই, ক্যাবটা বুক করতে হবে এবার…

তিন্নিঃ আর একটু ভিজি না রে…

মেঘঃ কাকিমা আমার দায়িত্বে তোকে কলেজ পাঠায়, তোকে তো ভরসা করা যায়না, দেখা গেল কলেজ না এসে গঙ্গার ধার…
এবার যদি আমার জন্য জাঁকিয়ে জ্বরটা আসে একটা মারও নীচে পড়বেনা! চল এবার,আমি পেয়ে গেছি যাকে খুঁজছিলাম!

তিন্নিঃ মানে! কাকে খুঁজছিলি এখানে?

মেঘঃ হারিয়ে যাওয়া নির্ভেজাল হাসিটা তোর ঠোঁটের কোণের! প্রাক্তনের সাথে যেটা হারিয়ে গেছিল অনিচ্ছাকৃত কোনো আবেশের বশীভূত হয়ে! যেটার অভ্যেসে অভ্যস্ত আমি, অনেকদিন পর তুই হাসলি আবার তিন্নি! সেই চিরাচরিত প্রাণোচ্ছল হাসিটা…

তিন্নিঃ কেউ তো রাখেনি কোনো কথা, তাহলে কেন শুধু তুই প্রতিটা মুহূর্তে আমার সব ভালোলাগাদের ইন্ধন জুগিয়ে যাস মেঘ? বন্ধুত্বের প্রথম দেওয়া অঙ্গিকারেরা এতোটাই প্রখর?

মেঘঃ হয়তো তাই, আর সেই কারণেই হয়তো অবলম্বন হয়ে উঠতে পেরেছি, আর পেরেছিস!
তোর ক্যাব চলে এসেছে, বাড়ি গিয়ে জানাস্…

তিন্নিঃ তুই যাবিনা?

মেঘঃ দেখি সোমদত্তার বাড়ির সামনে দিয়ে উথাল-পাথালহীন হৃদয়ে হাঁটতে পারি কি না! যাই হোক, পৌঁছে জানাস।

তিন্নিঃ আচ্ছা।
……………………………………..

সোমদত্তা,

তোমায় চিঠি লিখছি আজ, ঠিকানা জানিনা, জানিনা আজ তোমার সিঁথি কারুর ছোঁয়ায় রাঙা কি না! জানিনা কোনো পুরোনো নিয়মে তুমি শহরের রাতগুলোয় আজও স্বপ্ন দেখো কি না, জানা নেই এই অজানার উত্তরগুলো, আজ নতুন করে জানতেও চাইবো না, প্রশ্নগুলো অবান্তর করেছি নিজের কাছে অনেক লড়াইয়ের পর, নিজের সাথে লড়েছি সোম! তবুও আজও পারিনি এই মিথ্যেটা ভুলতে, যে তোমার বাড়ির রাস্তাটা কলেজের শর্টকাট, ১০ মিনিট ঘুরে আজও যখন যাই ওই হলুদ বাড়িটার মরচে পড়া তালা লাগানো দরজাটার সামনে দিয়ে, আজও ভাঙি। হ্যাঁ, দুমড়ে মুচড়ে যায় আমার হৃদয়ের শেষ কোশটা! বলতে পারো কেন?
তুমি তো মনে রাখোনি সেই দিনগুলোর প্রতিশ্রুতিদের! তবে পারো বলতে, কেন আজ আমি তোমার বাড়ির সামনের রাস্তায় উথাল-পাথালহীন হৃদয়ে হাঁটবো ভেবেও টানা সাড়ে সাত মিনিট ওই মুষলধারার বৃষ্টিতে ভিজে একদৃষ্টে তাকিয়ে ছিলাম ওই তালাটার দিকে?
প্রথম প্রেমটা অজান্তেই। প্রাক্তন হওয়ার রেষটা কাটেনি, না?
……………………………………..

তিন্নিঃ পৌঁছে গেছি রে…

(চলবে…)

Facebook Comments Box

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *