রাতুল আর দিশা ওদের রাস্তাতেই পরিচয় । ওরা রোজ একি বাসে করে যায় । রাতুল সরকারী অফিস এ কর্মরত । আর দিশা কলেজে পরে ।ওদের কলেজ আর অফিস একি রাস্তায় পরে ।
প্রথম দিকে ওদের সেরকম একটা কথা হতো না । কিন্তু দুজন – দুজনকে দেখতো । হঠাৎ একদিন রাতুল সাহস করে দিশাকে ওর নাম জিজ্ঞেস করল । তারপর থেকেই ওদের প্রেমের শুরু । কিন্তু মজার বিষয় হলো ওরা কেউ কাউকে কোনোদিন “ভালবাসি” কথাটা বলেনি । দিন যায় ওদের প্রেমের গভীরতা বারে ।
এরপর একদিন ওরা রাতুলের অফিস এর পাশের একটি কফি হাউসে দেখা করে । সেদিন ওরা ঠিক করে কোনো কিছুই বাড়িতে লুকিয়ে করবে না । সাথে আরো অনেক কথাই হয় । দুজনের পছন্দ অপছন্দ গুলোও অনেক টাই ওদের জানা হয় । রাতুল অনেক ছোটবেলায় ওর মাকে হারায় । ওর মাকে সাদা কাপড়ে মুড়িয়ে রাখতে দেখেছিল, তারপর থেকে রাতুল এর সাদা কাপড় ভীষণ অপছন্দের সে কথাও জানায় । অনেক কথার শেষে দুজনে কফি খেয়ে নিজেদের বাড়ি ফেরে ।
আর কফি হাউসের কথা অনুযায়ী রাতে খাওয়ার টেবিলে দুজনে তাদের সম্পর্কের কথা বাড়ির লোককে জানায় । সব শুনে ওদের কারোরই বাড়ির লোক আপত্তি করেনি । সেইদিন ওরা ভীষণ খুশি হয়েছিল বাড়ির লোকের সম্মতি পেয়ে । সেই দিনই প্রথম ওরা ফোনে সারারাত কথা বলেছিল । দুদিন পর ঠিক হয় রাতুলের বাড়ির লোক দিশা যাবে বিয়ের বিষয় নিয়ে কথা বলতে । সেই দিন আবার আগের মতোই ওরা বাসে করে কেউ কলেজ আর কেউ অফিসে যাচ্ছিলো ।
হঠাৎ করেই সামনে থেকে একটা ট্রাক এসে ধাক্কা মারল । বাসটা পরে যায় । অনেক মানুষ আহত হয় আবার নিহত ও হয় অনেকেই ।রাতুল ভীষণ ভাবে আহত হয় জ্ঞান হারায় । যখন জ্ঞান ফেরে তখন দেখে ওর পাশে সাদা কাপড়ে জড়ানো একটা কেউ শুয়ে আছে ।কাপড়টা সরাতেই রাতুল দিশাকে দেখতে পায় , আর আঁতকে ওঠে । আর একটা কথাই বলে ” দিশা আমি তো তোমাকে বলেছিলাম সাদা কাপড় আমি সহ্য করতে পারিনা, তাও কেন সাদা কাপড় জড়িয়ে শুয়ে আছো ” । তারপর রাতুল আর কোনোদিন কথা বলেনি । পরপর দুজন কাছের মানুষের চলে যাওয়া রাতুল মেনে নিতে পারে নি ।
যে সাদা কাপড় রাতুল সহ্য করতে পারত না আজ সেই কাপড় জড়িয়ে নিজেই না ফেরার দেশে পাড়ি দিলো । আর সাদা কাপড়েই ওদের প্রেম অক্ষয় হয়ে থাকলো ।