পাহাড় ঘুরতে বা ভ্রমণ করতে ভালোবাসেন যারা তাদের কাছে দার্জিলিং অন্যতম একটি স্থান। দার্জিলিংয়ের কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ সৌন্দর্য দেখার লোভ কেউই ছাড়তে পারে না। তাই সুযোগ পেলেই বাঙালি দার্জিলিং, লাভা, লোলেগাঁও ঘুরে আসে। দার্জিলিং যদিও সবার গন্তব্য হয়, তবে তার আশে পাশেও যে ছোটখাটো অনেক জায়গা আছে তা অনেকেই জানেনা। এইসব সাইট সিন দেখার জন্য তাই একটু সময় করে আসতে হয়। দার্জিলিং কিংবা কালিংপং ইত্যাদি যাওয়ার পথে পথে যে ছোটখাট পিকনিক স্পট সাইট সিন আছে তা কিন্তু নৈসর্গিক থেকে কম কিছু নয়। আর তার জন্য শিলিগুড়ি এসে যদি একটা দিন হাতে রাখা যায় তবে তা আপনি উপভোগ করতে পারবেন খুব ভালোভাবে। এনজেপি স্টেশন, এয়ারপোর্ট কিংবা জংশন যেখানেই হোক না কেন, নেমে আপনাকে শিলিগুড়ি জংশন এ আসতে হবে এবং সেখান থেকেই আপনি বিভিন্ন ছোট গাড়ি, টাটা সুমো পেয়ে যাবেন সেটায় করেও এসব সাইট সিন দেখতে পারেন কম খরচে। আবার যদি আপনি ওখানকার বাসিন্দা হন কিংবা ধরুন শিলিগুড়ির আশেপাশে কোনো জেলায় থাকেন তাহলে বাইকে করেও এসব জায়গায় ঘুরে দেখতে পারেন।
শুকনা:-
জংশন থেকে দার্জিলিং মোড় হয়ে কিছুটা পথ গেলে আপনি পৌঁছে যাবেন শুকনা। ফাঁকা, চাবাগান ঘেরা দূর থেকে পাহাড়ি দৃশ্য দেখা এই রাস্তা যেতে যেতে আপনাকে পাহাড়ের অনেক কাছে এনে দেবে। শুকনায় একটি বড় বজরংবলীর বিশালাকার মূর্তি আছে এবং সেটি সংলগ্ন একটি মন্দির আছে- সেখানে পুজো হয়। পাশে কিছুটা এগোলেই একটা ছোট মিউজিয়াম আছে যেখানে সময়মতো গেলে ঘুরে দেখা যায়। এছাড়াও রয়েছে শুকনা স্টেশন, যেখানে টয়ট্রেনের চলাচল দেখতে পারা যায় এবং সেটিতে চড়েও এইসব সিনিক বিউটি দেখতে পারা যায়। এছাড়াও রয়েছে মহানন্দা ওয়াইল্ডলাইফ স্যাংচুয়ারি যেখান থেকে বন্যপ্রাণী এবং অভয়ারণ্য দেখা যায় কিন্তু সেটি হয়তো কোভিড সিচুয়েশন জন্য এখন বন্ধ তা খোঁজ নিয়ে যেতে হবে। চারিদিক পাহাড়ে-জঙ্গলে ঘেরা রাস্তায় ছোট ছোট বাঁদর, হনুমান ভর্তি। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পশু-পাখিদের দেখা যেতে পারে। কপাল ভালো থাকলে, রাস্তায় চলতে চলতে হাতি, বাইসন, ময়ূর দেখা যেতেই পারে। শুকনা থেকে রাস্তা দুই ভাগ হয়ে গিয়েছে- একদিকে চলে গিয়েছে মধুবন, রোহিনি ইত্যাদির দিকে; আরেক দিকে চলে গিয়েছে রংটং, স্মৃতিবন, ঘয়াবাড়ী ইত্যাদির দিকে। ছোট ছোট এইসব স্পটগুলো পিকনিক কিংবা হঠাৎ ঘুরে আসার জন্য ভীষণ ভালো। রাস্তায় ছোট-বড় বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট ভর্তি, চাইলেই পাহাড়ি স্বাদের ভালোবাসা তাইপো, থুকপা,মোমো,আলুমিমি খেতেই পারেন। খোলামেলা বাতাস আর প্রাণভরে প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগের জন্য অন্যতম এই স্থান এটুকু বলা যেতেই পারে।