শত শত যুগের পৌরোহিত্য কার্যকলাপে ব্রাহ্মণ পুরুষ একচেটিয়া আধিপত্য বিস্তার করে এসেছে। কিন্তু এই বৎসর এক আশ্চর্য ঘটনার সূত্রপাত ঘটছে বাংলার বুকে, যা ইতিহাসের পাতায় সর্বপ্রথম।
হিন্দু ধর্মের জনপ্রিয় ও বিখ্যাত দুর্গোৎসবের মাতৃবন্দনায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চলেছে নারীশক্তি নবরূপে।দেবতাদের মিলিত শক্তিকে শুধুমাত্র স্বর্গলোক কেন? মর্ত্যলোকেও হারাতে পারবে না। এই বছর শারদ উৎসবে পুরুষতান্ত্রিকতায় সর্বপ্রথম আঘাত হানছে নারীশক্তি। প্রত্যেকবারের মতো অভিনবত্বভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ বিষয়কে তুলে ধরেছেন কলকাতা শহরের দুর্গোৎসবে বিখ্যাত ৬৬ পল্লী পুজো কমিটি। মূর্তি নির্মিত থেকে সকল পূজোর নিয়মকানুন অনুসারে আয়োজন করে থাকে নারীজাতি, তাহলে কেন পৌরোহিত্য কার্যকলাপে শুধুমাত্র পুরুষতান্ত্রিকতা আধিপত্য বিস্তার করবে? সকল প্রশ্নের উত্তর দিতে এগিয়ে এল এই পুজো কমিটি।
গত বৎসর বাংলা চলচ্চিত্র জগতের বিখ্যাত ঋতাভরী চক্রবর্তী অভিনীত “শবরী” চরিত্রটি “ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মটি”ছবির মাধ্যমে সমাজের নারীদের সকল কার্যক্রমে সমান অধিকার হওয়া উচিত তা বুঝিয়েছিল। বিখ্যাত পরিচালক অরিত্র মুখোপাধ্যায়ের এই ছবিটি বহু আন্তর্জাতিক উৎসবে পাড়ি দিয়েছে।
এবার “শহরী” চরিত্রটি বাস্তব জগতে রূপান্তরিত করার জন্য দক্ষিণ কলকাতার ৬৬ পল্লী দুর্গাপুজো উৎসব কমিটির দায়িত্ব দিল চারজন সুপন্ডিত নারীর হাতে। পৌরোহিত্য কার্যকলাপ এর মূল দায়িত্বে রয়েছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগের অতিথি অধ্যাপক নন্দিনী ভৌমিক ও তার তিন সঙ্গী- রুমা রায়, সেমন্তী ব্যানার্জি এবং পৌলোমী চক্রবর্তী।
আগামী ২২শে আগস্ট রাখিপূর্ণিমার দিন খুঁটিপূজোর মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে উপস্থাপন করবে চারজন মহিলা পুরোহিতকে। ৬৬ পল্লী দুর্গাপুজো কমিটি এবারের অভিনবত্ব থিমের নামকরণও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে-“মায়ের হাতে মায়ের আবাহনা”
শারদ উৎসব-এর পাশাপাশি অন্যান্য ধর্মীয় অনুষ্ঠানেও এইরূপ নারীশক্তি জনপ্রিয় হোক এবং নতুনত্ব কার্যসূচিকে স্বাগত জানিয়ে দেশের পথনির্দেশক হোক বাংলা।