LaughaLaughi থেকে প্রকাশিত একটি ব্যক্তিগত চিঠি:-
আদরের মাম্মাম,
আজ দিনটা LaughaLaughi দিবস, তোমার বাবির জন্মদিন, তোমার উৎসবের দিন। তোমার বাবি আজ ৩-এ পা রেখেছে। LaughaLaughi মানে তোমার বাবি যে তোমার কি প্রচণ্ড আবেগ, তা বোধহয় কারোর কাছেই আজ আর অজানা নেই। তাই আজকের দিনে আমাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল LaughaLaughi-র আজকের এই সাফল্যের নেপথ্যে থাকা মানুষগুলোকে নিয়ে কিছু লেখার জন্য, আর সৌভাগ্যবশত তোমায় নিয়ে লেখার দায়িত্বটাও পেয়ে গেল তোমার “তিন্নি”। কিন্তু আমার কাছে যে “তুমি” নামক আবেগটা কোনোদিনই কেবলমাত্র LaughaLaughi পরিবারের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলনা, সেই কারণে formality করে কিছু লেখা সম্ভব হয়ে উঠলো না, এই চিঠিটাও ব্যক্তিগতই হয়ে গেল।
একদিন যদিও LaughaLaughi-ই মাধ্যম হয়েছিল তোমার কাছ অবধি পৌঁছানোর জন্য, তবে Content Head বা Creative Director পদমর্যাদাগুলো আমার “মাম্মাম” নামের আবেগ ছাপিয়ে যেতে পারেনি। প্রথমটায় তোমার সাথে আলাপ সেরেছিলাম তোমার ভক্ত বা অনুগামী হয়েই। না, fan ছিলাম না কোনোদিনই, কারণ fan হারিয়ে যায় কিছু সময় পরে, কিন্তু মাম্মামের “তিন্নি” হারিয়ে যেতে চায়নি, হারিয়ে যেতে চায়না। শুরুর দিকে অবাক হয়ে ভাবতাম যে মানুষটা কি অন্তর্যামী! না বলা মনের কথা এতটা সাবলীলভাবে কেমন করে লিখতে পারে? যে কথা বলতে আমরা ভয় পাই, সংকোচ বোধ করি, সেই কথাও কত সহজ করে বলে ফেলে মানুষটা!
তোমার লেখা, তোমার সংস্পর্শই আমায় কলম আঁকড়ে বাঁচতে শেখালো। না, সাহিত্যের দৌড়ে আমি অনেকখানি পিছিয়ে, কোনোদিন কলম ধরবো সেটা ভাবতেও পারিনি, কিন্তু সেই “আমি”র কলমের ছাই চাপা আগুন সেদিন উস্কে দিয়েছিলে তুমিই, শিখিয়েছিলে কলমে প্রতিবাদ করতে, আর সেই প্রতিবাদী কলমের সাক্ষী থাকতো আমার ডায়েরীর পাতা, মুখপুস্তিকার দেওয়াল আর ভরে যেতো তোমার inbox। সেই দিনটা আজও মনে পড়ে, ৩০শে মে, ২০১৭, প্রথম লিখেছিল আমার কলম, তাও আবার তোমার জন্যই।
জানো তো মাম্মাম, আমি জানিনা পরজন্ম বলে আদৌ কিছু হয় কি না! তবে ভীষণভাবে চাই যেন পরজন্ম সত্যি হয়। এই জন্মে তো ৯ মাস তোমার জঠরে বাস করে, তোমায় গর্ভযন্ত্রণা দিয়ে, তোমার নাড়ি ছিঁড়ে জন্মানো হল না, আগামী জন্মেই না হয় “তিন্নি” জায়গা পাক তোমার গর্ভে। তোমার গর্ভপ্রসূত না হয় পরজন্মেই হলাম, তাই এ জন্মে হৃদয়প্রসূত হয়েই সন্তুষ্ট থাকি। তুমি প্রতিনিয়ত লালন করো তোমার মাতৃত্বের পরশে। তোমার গায়ের “মা মা” গন্ধ, স্নেহের উষ্ণতা সবটা পাই। মনখারাপি বেলার না বলা কথাগুলোও যেন কেউ ফিসফিসিয়ে বলে দিয়ে আসে তোমার কানে কানে। তোমায় না পেলে হয়তো জানতেই পারতাম না যে পুরুষও আবেগী হয়, পুরুষও মাতৃত্বে সমৃদ্ধ হয়!
দিনের শেষে কোথাও একটা গিয়ে যখন দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যায়, খুব একা হয়ে পড়ি তখন জানি যে আমার একটা আশ্রয় আছে, একটা ভরসার জায়গা আছে, তা হলে তুমি মাম্মাম। তোমার আদর, স্নেহ থেকে বঞ্চিত হতে চাই না কোনোদিনও, তাই চিঠি শেষে ঠাকুরের দুটো লাইন না লিখে পারলাম না…
“বড়ো আশা করে এসেছি গো কাছে ডেকে লও,
ফিরায়ো না জননী।।”
ইতি-
তোমার তিন্নি
চিঠিটা পড়ে পাঠকেরা কেউ কেউ হয়তো বুঝেই গেছেন এই চিঠিটা কার জন্য লেখা, তবে যারা বোঝেননি তাদের জন্য বলে দেওয়া ভালো যে LaughaLaughi-র সাফল্যের নেপথ্যে থাকা এই মানুষটি আর কেউ নয়, সবার খুব কাছের…