“খেজুর”-এ আলাপ

“খেজুর”-এ আলাপ

 

“খেজুর গাছে হাঁড়ি বাঁধো মন,
নইলে রস গড়িয়ে গোড়া পচে অকালে হবে মরণ…”

আজ হঠাৎ গান দিয়ে হেঁশেলের খবর কেন শুরু করলাম, সেটাই ভাবছেন তো? আসলে খেজুরের রসের দিন যেতে বসেছে ঠিকই, কিন্তু এই খেজুরই হল এমন একটা ফল যা সারাবছর পাওয়া যায় আর আজকের হেঁশেলের খবরও সেই ছোট্ট ফল খেজুরকে নিয়েই।

খেজুর ফলটা দেখতে ছোটো হলেও, এই খেজুরের কিন্তু অনেক গুন। যারা নিজের চেহারা নিয়ে চিন্তিত, তারা কিন্তু নির্দ্বিধায় এটা খেতেই পারেন কারণ এটি ওজন কমাতে সাহায্য করে। খেজুরে থাকে পর্যাপ্ত পরিমাণ ফাইবার, যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেও সাহায্য করে। তাছাড়া এটি হার্টকে ভালো রাখে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, রক্তাল্পতা নিরাময় করতে সাহায্য করে এবং সর্বোপরি হজমে সাহায্য করে।

তাই যে ছোট্টখাট্টো ফলটার এত গুন, তাকে নিয়েই খানিক আলোচনা হোক আজকের হেঁশেলের খবরে। আজ বরং জেনে নেওয়া যাক কীভাবে কাজু আর খেজুরের যুগলবন্দীতে বানিয়ে ফেলা যাবে “খেজুর বরফি”।

যারা ডায়েটে আছেন তারা নিশ্চয় কাজু শুনে আঁৎকে উঠলেন? যে হঠাৎ খেজুরের সাথে কাজুকে কেন জুড়ে দিলাম! বেশ তো স্বাস্থ্যকর কিছু একটা রান্না হতে চলেছিল হেঁশেলে! কিন্তু তাদের জন্য বলি, আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য যতটা উপকারী খেজুর, ঠিক ততটাই কিন্তু কাজুও। কাজুতে উপস্থিত থাকে প্রোঅ্যান্থোসায়ানিডিন, আর উচ্চ মাত্রায় কপার, যা ক্যান্সার কোশ ধ্বংস করতে সাহায্য করে। তাছাড়া হার্টকে ভালো রাখতে আর রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও কাজু অনবদ্য। এছাড়া হাড়, ত্বক, চুল ভালো রাখতেও সাহায্য করে কাজু। যদিও বলে হয় কাজুতে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট বর্তমান, কিন্তু কাজুতে থাকে উপকারী কোলেস্টেরল, যা ওজন কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও এতে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।

তাই খুব বেশী না ভেবে, বাড়িতে বানিয়েই ফেলা যায় “খেজুর বরফি”।

“খেজুর বরফি” বানাতে প্রয়োজনীয় উপকরণঃ

খেজুর বাটা ২ কাপ, খোয়া ক্ষীর ১ কাপ, ঘি ১/২ চামচ, চিনি ২ টেবিল চামচ, কুচোনো কাজু ১/২ কাপ, এলাচ গুঁড়ো ১ চিমটে, কনডেন্সড মিল্ক ২ চামচ, ময়দা প্রয়োজন মতো।

“খেজুর বরফি” বানানোর পদ্ধতিঃ

“খেজুর বরফি” বানাতে, প্রথমে একটা ননস্টিক কড়াইতে ঘি গরম করে নিয়ে তাতে বেটে রাখা খেজুর দিয়ে দিতে হবে। এবার তাতে একে একে খোয়া ক্ষীর, আর চিনি দিয়ে ভালো করে পাক করতে হবে।
পাক হতে থাকাকালীন সময়ে এতে এক এক করে কনডেন্সড মিল্ক, এলাচ গুঁড়ো এবং কাজু কুচি দিয়ে পাক করতে হবে। মিশ্রণের পাক হয়েছে কিনা বুঝতে পারবেন যখন সমগ্র মিশ্রণ কড়াইয়ের গা থেকে ছেড়ে আসবে। এবার মিশ্রণটি একসাথে ধরে রাখার জন্য অল্প ময়দা মিশিয়ে আরও অল্প সময় পাক করতে হবে। এবার একটা থালায় ভালো করে ঘি মাখিয়ে নিয়ে তাতে মিশ্রণ ঢেলে ছুরি দিয়ে সমান করে ঠাণ্ডা হতে রাখতে হবে। মিশ্রণ ঠাণ্ডা হয়ে এলে তা বরফির আকারে কেটে, ওপর থেকে কাজু কুচি ছড়িয়ে দিলেই “খেজুর বরফি” প্রস্তুত সরাসরি পেটে যাওয়ার জন্য।

চুপিচুপি বলে রাখি, খেজুরের এই মিশ্রণ কিন্তু কোনো মিষ্টি বা পিঠে বা মিষ্টি কোনো পরোটার পুর হিসাবেও অনবদ্য। তাই নতুন কিছু খাইয়ে বাড়ির লোককে চমকে দিতে বানিয়ে ফেলুন “খেজুর বরফি”।

আজ তবে এটুকুই থাক, নতুন কিছু জানতে সাথে থাকুন LaughaLaughi-র। আবার অন্য একদিন ফিরবো হেঁশেলের খবর নিয়ে। আর হ্যাঁ, “ক খ গ ঘ” মনে আছে তো? না না, বর্ণপরিচয়ের “ক খ গ ঘ” মুখস্ত ধরছি না, ডঃ কৃষ্ণেন্দু চ্যাটার্জীর পরিচালনায় বড় পর্দায় আগামী ৯ই মার্চ মুক্তি পেতে চলেছে “ক খ গ ঘ”, একটি কমেডি ছবি, যার গল্প গড়ে উঠেছে একটি মেস বাড়িকে কেন্দ্র করে। এ বাবা! যা! দেখেছেন, সবই বলে দিচ্ছিলাম! না, আর কিছু বলবো না। “ক খ গ ঘ” সম্বন্ধে আরও জানতে সাথে থাকুন LaughaLaughi-র আর ৯ তারিখ তবে দেখা হচ্ছে প্রেক্ষাগৃহে…

Facebook Comments Box

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *