ফলাফল এবং অনিশ্চয়তা

কিছুদিন আগেই প্রকাশিত হয়েছে উচ্চমাধ্যমিক এবং ওই স্তরের অন্যান্য বোর্ডের ফলাফল। ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে এই ফলাফল নিঃসন্দেহে অতি গুরুত্বপূর্ণ। উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফলের সঙ্গে সঙ্গে হাজার হাজার ছাত্র ছাত্রীর ভবিষ্যৎের চাবিকাঠি গণনা হয়। স্কুলজীবন শেষ করে কলেজ জীবনের গন্ডি পেরোনোর মাঝে যে বিস্তার পথ, তা কোনওভাবেই মসৃণ নয়। চাপা উৎকন্ঠা নিয়ে অধীর আগ্রহে সকলে অপেক্ষায় থাকে তাদের আশানুরূপ প্রতিষ্ঠানে অথবা ভালোলাগার বিষয়ে চর্চা করার সুযোগ পাবে, না কি বঞ্চিত হবে।
এইসময় নানান অনিশ্চয়তা, জল্পনা- কল্পনা এবং কৌতুহলী প্রশ্নের ভিড়ে, নিজের খেই হারিয়ে ফেলে পড়ুয়ারা। কোন বিষয়ে পড়লে সঠিক অর্থে লাভবান হওয়া যায় সেই নিয়ে হাজারো লোকের বিবিধ মতামত ভেসে আসে। হয়তো সেক্ষেত্রে ছাত্র অথবা ছাত্রীটি নিজের দিকনির্দেশ হারিয়ে ফেলে। কেউ কেউ আবার জীবনের এই বড় পরীক্ষায় আশানুরূপ ফল করতে না পারার হতাশায় মানসিকভাবে বেসামাল হয়ে পড়ে, এবং ভবিষ্যৎ জীবন সম্পর্কে ভাবনা- চিন্তা করার বিন্দুমাত্র উৎসাহটুকুও হারিয়ে ফেলে।
আজকালকার সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বলা যেতে পারে যে আধুনিক কালে সমস্ত পড়ুয়ারাই স্বাধীনচেতা, তারা নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভীষণভাবে চিন্তিত। তাই সকলেই আধুনিক যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এমন কিছু নির্দিষ্ট বিষয়ভিত্তিক পড়াশোনা করতে চায় যাতে ভবিষ্যতে কর্মসংস্থানের পথ সুদৃঢ় হয়।
এখনকার দিনে পড়াশোনার জন্য নিত্যনতুন পথের দরজা সাদরে অভিনন্দন জানাচ্ছে। মেধাবী- অমেধাবী সকল রকম পড়ুয়ারাই তাদের নিজস্ব ইচ্ছেমত বিষয় নিয়ে ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে যেতে পারে।
অপরদিকে পুঁথিগত বিদ্যা শেষ করে অ্যাপ্লিকেশন ভিত্তিক নানান কোর্সের মাধ্যমে নিজের দক্ষতা বাড়িয়ে তোলার জন্যও রয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা।
উচ্চশিক্ষা শেষ করে কর্মজীবনে প্রতিষ্ঠা পাওয়া বিশেষ সহজ না হলেও তা নিতান্ত কঠিনও কিন্তু নয়। এর জন্য দরকার অনেকটা মনোবল এবং নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থাকা। উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল গুরুত্বধারণ আবশ্যিক ভাবে করে তবে সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিলে যেকারোরই ভাগ্য পরিবর্তন হতে পারে। তাই এরূপসময় কৃতী সকল ছাত্র- ছাত্রীদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একটা সামান্য সিদ্ধান্ত ভবিষ্যৎ ভাঙতেও পারে, গড়তেও পারে॥

Facebook Comments Box

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *