মেঘ ও মেঘবালিকার গল্প

বর্ষা আর মেঘ দুজন দুজনের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা।

আপনারা শুনেছেন হয়তো, কিছু মেঘ গর্জালেই বর্ষায় না।

এক্ষেত্রে ব্যাপারটা পুরো উল্টো। মেঘ প্রচন্ড ইমোশনাল আর বর্ষা হল শক্ত প্রকৃতির এবং ভীষণ প্র্যাক্টিক্যাল।

ওদিকে মেঘ শান্ত স্বভাবের আর বর্ষা খুব তাড়াতাড়ি রেগে যায় বা বলা যায় ক্ষেপে যায়।

মেঘ ভীষণভাবে ম্যাচিওর। আবার অন্যদিকে বর্ষা মাঝেমধ্যে খুবই ইমম্যাচিওর হাবভাব করে কিন্তু কিছু কিছু জিনিস খুব ম্যাচিওর ভাবে সামলে নেয়।

মেঘ ছোট ছোট আঘাত পেলেই মন খারাপ করে বসে। আর বর্ষা সেগুলো কে প্র্যাকটিক্যালভাবে মেঘকে বুঝিয়ে দে, যে মন খারাপ করলে কিছুই হবে না। ওরা অনেক দিন পরে আজ ওদের প্রিয় বন্ধু মনীষার বাড়িতে তার জন্মদিন পালন করতে গিয়েছিল। মহামারির কারণে ২ ৩ মাস দেখাও করেনি।

এখন বাসস্ট্যান্ডে বাসের অপেক্ষায় বসে আছে দুজন আর হঠাৎ বৃষ্টি পরা শুরু হয়ে গেল।

এদের প্রচুর অমিলের মধ্যে একটা মিল হল যে এরা দুজনেই বৃষ্টি খুব ভালোবাসে। আর বৃষ্টিতে ভেজার দু-এক খানা গল্পও আছে ওদের।

বর্ষা- এই মেঘ, চল না একটু বৃষ্টিতে ভিজি।

মেঘ – তোর কি খেয়ে দেয়ে কাজের খুব অভাব হয়েছে?? চুপচাপ বস এখানে। জানিস তো তোর ঠান্ডার ধাচ আছে। আমি বরং একটু ভিজে আসি।

বর্ষা – হ্যাঁ তুই তো ইমিউনিটির গেলন নিয়ে জন্মেছিলিস তাই না??

মেঘ – সর্দি-কাশি তে কে বেশি ভোগে??

বর্ষা আমি

মেঘ – মা-বাবার সাথে পাহাড়ে ঘুরতে গিয়ে ঠান্ডা লেগেছে বলে কে এক সপ্তাহ ধরে কাশি আর গলা ব্যাথায় ভুগেছিল??

বর্ষা – আমি।

মেঘ – তাহলে কার বৃষ্টিতে ভেজা উচিত না।

বর্ষা – তোর।

মেঘ – যা বাবা। আমি কি দোষ করলাম?? তোকে ভিজতে দিচ্ছিনা তোর ভালোর জন্যে।

বর্ষা – ন্যাকা খোকা আমার! যেন উনি নিজে কোনদিনও ভোগে না। শীতকালে যেন কে পাঁচ দিন মত কাশিতে ভুগেছিল।

মেঘ – শোন আমি রোজ শীতকালে ঠান্ডা জল দিয়ে স্নান করতাম। আমি গরম জল দিয়ে স্নান করতে পারিনা সেটা তুই খুব ভালোমতো জানিস।

বর্ষা – তখন কি তুই আমার কথা শুনেছিলিস?? বারবার বলেছিলাম ঠান্ডা জল দিয়ে ওভাবে সকাল সাড়ে ছটার সময় স্নান করিস না। উনি নাকি স্নান না করে বেরোতে পারে না সকালে। তোর কথা আমি কেন শুনবো?? শুনবো না তোর কথা।

মেঘ – দেখ বর্ষা, ঠান্ডা লেগে যাবে। এরকম করিস না। বাড়ি ফিরতে হবে কিন্তু আমাদের।

বর্ষা – আচ্ছা ঠিক আছে যা। আমাকে একটু বৃষ্টিতে হাতটা তো ভেজাতে দে।

(বর্ষা সিট থেকে উঠে বৃষ্টি উপভোগ করতে লাগলো)

মেঘ – কেন রোদের মতো হাসলে না, আমায় ভালোবাসলে না। আমার কাছে দিন ফুরালেও আসলে না।

বর্ষা – এই, কিসব গাইছিস? তোকেই তো ভালোবেসেছি বিগত দেড় বছর ধরে। পারলে ভবিষ্যতেও ভালোবেসে যাবো এভাবেই। শুধু এসব দুঃখের গান গাওয়া বন্ধ কর প্লিজ। তার চেয়ে বরং তুই ‘ ভিগি ভিগি রাতো মে ‘ কর।

তোর গলায় শুনতে বেশ ভালই লাগে।

মেঘ – ঠিকাছে সে পরে হবে।

বর্ষা – ওরকম ভাবে তাকিয়ে আছিস কেনো?

মেঘ – কোনো কারণ ছাড়াই তোর দিকে এরকম ভাবে তাকিয়ে থাকতে বেশ ভালো লাগে আমার। মনে হয়, না থাক বাদ দে।

বর্ষা – ঠিকাছে বলিসনা। আমি একটু হাত ভিজিয়ে বৃষ্টি উপভোগ করি।

মেঘ – পাগলী।

বর্ষা – কিন্তু তোর জন্যে না। মনে রাখবি।

মেঘ -ঠিকাছে ঠিকাছে।

দুজনেই মুচকি হেসে উঠলো।??

Showমেন তালুকদার

ছবি – তিয়াসা কাজু মুখার্জি

Facebook Comments Box

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *